বিজ্ঞাপন

নতুন বাজেটে অতিরিক্ত ১১ হাজার কোটি টাকা চায় বিদ্যুৎ বিভাগ

May 26, 2018 | 8:50 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তে বরাদ্দ পাওয়ার পরও অতিরিক্ত ১০ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য এই অর্থ প্রয়োজন। সম্প্রতি অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর কাছে লেখা বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এক চিঠিতে এই অতিরিক্ত বরাদ্দের অনুরোধ জানান। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ওই কর্মকর্তা জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বাজেট বরাদ্দ থাকছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ৩১ হাজার ৬২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু এডিপি প্রস্তাব থেকে ৮ হাজার ৬৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কেটে ফেলেছে অর্থ বিভাগ। ফলে আগামী আগামী অর্থ বছরে বিদ্যুৎ খাত কমবেশি ২২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা সরকারি বরাদ্দ পেয়েছে। যা চাহিদার এক চতুর্থাংশ কম।

বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা এপিডিতে যে বরাদ্দ চেয়েছি তার চেয়ে কম পেয়েছি। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হলে এই টাকায় হবে না। এজন্য বিষয়টি আমরা অর্থ বিভাগকে নতুন করে জানিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী অনেক প্রকল্পেই চলছে ধীরগতি। কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। তাই এ খাতে বড় বিনিয়োগ ও বরাদ্দ দরকার। তা না হলে লক্ষ্য পূরণ করা যাবে না।

বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলোর বাস্তবায়ন খরচ ২৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে খরচ পড়বে ৩৪৯ দশমিক ১০ বিলিয়ন টাকা। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের খরচ দাঁড়াবে ১৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার, ৪০০ মেগাওয়াটের বিবিয়ানা কেন্দ্র নির্মাণে খরচ ৩৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন টাকা এবং ৪০০ মেগাওয়াটের বিবিয়ানা-৩ কম্বাইন্ড সাইকেল কেন্দ্র নির্মাণে ৩৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন টাকা খরচ হবে।

পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ৪০০, ২৩০ এবং ১৩২ কেভির গ্রীড নেটওয়ার্কের উন্নয়নে কাজ করছে। এতে খরচ হবে ৩২ দশমিক ২৭ বিলিয়ন টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ গ্রীয় শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের ব্যয় ৪৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন টাকা।  ভেড়ামারা-বহরমপুর আন্ত:সীমান্ত সঞ্চালন লাইন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৪ বিলিয়ন এবং আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৩ দশমিক ২৭ বিলিয়ন টাকা।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বিভাগের ঊধ্র্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আসেনি। অনেক এলাকায় এখনও সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ বাকি। বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট। ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে হলে বড় বিনিয়োগ ও বরাদ্দ দরকার।

এখানে উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বিভাগ ২৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ১১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ছিল ১৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকা।

এদিকে, বিদ্যুত সচিবের লেখা চিঠিতে বলা হয়, আগামী অর্থ বছরে ২০১৮-১৯ এ বিদ্যুত বিভাগের ৩১ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু অর্থ বিভাগের সিলিং অনুযায়ী এডিপিতে আগামী অর্থ বছরে বিদ্যুত বিভাগ সর্বোচ্চ ২০ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ১০ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন।

সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন