বিজ্ঞাপন

১শ’ হেক্টর জমিতে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ, বিপাকে মরিচ চাষি

May 27, 2018 | 9:21 am

।। রিপন আনসারী, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

মানিকগঞ্জ: কাঁচা মরিচের জন্য মানিকগঞ্জের খ্যাতি সবারই কমবেশি জানা। তবে এবছর বাম্পার ফলন হলেও ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে মরিচ ক্ষেতের। বৃষ্টির পানি জমে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মরে যাচ্ছে মরিচ গাছ। ফলে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

শিবালয়ের শাইলী গ্রামের কৃষক সায়েদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন,‘এ বছর দুই বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছি, ফলন বেশ ভালই হয়েছিল। কিন্ত অতি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে আমার জমির তিন ভাগের দুই ভাগ মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।’

একই উপজেলার দুবুলিয়া গ্রামের দলিল উদ্দিন জানান, প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে মরিচ ক্ষেতে পানি জমে গেছে। এতে মরিচ গাছগুলো হেলে যায় এবং ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে মরে যাচ্ছে। যখন গাছ থেকে মরিচ তোলার সময় শুরু হয়েছে তখন ফলনসহ গাছ মরে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়ে গেছেন।

বিজ্ঞাপন

ঘিওর উপজেলার শোলধারা গ্রামের আক্কাস আলী, শাজাহান মিয়া জানান, ঝড় আর বৃষ্টির কারণে ক্ষেত মরে যাচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টির পর রোদ উঠলে মরিচ গাছগুলোর গোড়া পঁচে যায়। কীটনাশক ব্যবহার করেও তারা সুফল পাচ্ছেন না।

মানিকগঞ্জের বরংগাইল হাটের পাইকাররা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মরিচের ফলন বেশি হয়। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি আর ঝড়ে কারণে ফলন কমে যাচ্ছে। তাই আড়তগুলোতে মরিচ কম আসছে। এভাবে চলতে থাকলে এবার মরিচের সংকট দেখা দিবে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ব্যবসায়ী কোরবান আলী জানান, জেলার শিবালয়, ঘিওর ও হরিরামপুর উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিন্দু জাতের মরিচের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমান মরিচ বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বেশি পরিমান মরিচ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। তবে এবছর মরিচের ফলন ভাল হলেও বৃষ্টির কারণে মরিচ গাছগুলো মারা যাচ্ছে। যার ফলে কৃষকেরা হতাশায় পড়েছেন।

পাইকারী ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদ জানান,মানিকগঞ্জের হরিরামপুর, ঘিওর, শিবালয়, সাটুরিয়া ও সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মরিচের আবাদ হয়। এসব অঞ্চলের মরিচ ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় পাইকারি আড়তে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। শুধু দেশেই নয় মানিকগঞ্জের কাঁচা মরিচ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দুবাই, মালেশিয়া, সৌদি, কুয়েত, দাম্মাম, রিয়াদসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে। কিন্ত এ বছর ঝড়, বৃষ্টি ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মরিচ চাষিরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘এ বছর জেলায় সর্বমোট ৫ হাজার ৬ শ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৬০ হেক্টর বেশি। তবে অতিবৃষ্টি আর ঝড়ের কারণে মরিচ ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়ার (ফাঙ্গাসের) আক্রমণ হয়েছে। এতে প্রায় ১ শ হেক্টর জমির মরিচ গাছের ক্ষতি হয়েছে। ’

হাবিবুর রহমান চৌধুরী জানান,কৃষকদের গাছের গোড়ায় কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্ত যেসব গাছ মরে যাচ্ছে সেগুলো তুলে ফেলতে বলা হচ্ছে। তবে নতুন করে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ না ঘটলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবার আশা রাখা যায়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন